Image

পানিতে বিছানো পাথরের উৎমাছড়ায় একদিন

ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর এখন পর্যটকদের  জন্য একটা হটস্পট হলেও এর থেকে ৭-৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত উৎমাছড়া সিংহভাগেরই নজরের আড়ালে। তাই আমরা একদল ভ্রমণপিপাসু চলে যাই এর সৌন্দর্য অবলোকন করতে। রাস্তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় পুরো রাস্তাই আমার কাছে একটা অ্যাডভেঞ্চার ছিল।  

ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর থেকে উৎমাছড়ার পার্থক্য হলো, উৎমাছড়ায় পানির গভীরতা কম। ভোলাগঞ্জ সাদাপাথরে এই ভরা মৌসুমে আপনি কয়েক হাত দূরে গেলেই আর ঠাঁই পাবেন না, তাই যারা সাঁতার পারেন না তাদের জন্য এ জায়গা খুবই রিস্কি, পানির স্রোতও খুবই প্রবল। আমি একবার ওপারে যাওয়ার চেষ্ঠা করেছিলাম স্রোতের সাহায্য নিয়ে, কিন্তু মাঝপথে পেশি কাজ করা কমায় দিলো, শরীর অবশ হওয়া শুরু হয়েছিল। তাই ওপারে যাওয়ার চেষ্ঠা না করার অনুরোধ রইলো, যদিও দেখবেন অনেকে দিব্যি চলে যাচ্ছে। কিন্তু এটা খুবই রিস্কি। উৎমাছড়ার পানির গভীরতা সাদাপাথরের তুলনায় অনেক কম, সবখানেই ঠাঁই পাওয়া যায়, এপাড় থেকে ওপারে যাওয়া তাই কম রিস্কি। তবে পানির গভীরতা কম হলেও পানির ঢল ও পরিমান ভালোই আছে। ক্ষীপ্র ও বিশাল পরিসরে পানি আসতে থাকে। এখানকার পাথরগুলো ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর থেকে অনেক বড়!

পাথর সাইজে বড় হওয়ার কারনে পানি বেশি বাধা পেয়ে পাথরের আশেপাশে চিপা চুপা দিয়ে প্রবল বেগে প্রবাহিত হয়, নিজেকে এই বেগের সামনে আটকিয়ে রাখা খুব টাফ। তবে ভয় নেই এখানে আপনি ডুববেন না, তাহলে আটকিয়ে রাখার চেষ্ঠা কেন? ছেড়ে দিন না নিজেকে স্রোতের কাছে, দেখা যাক কোথা থেকে কোথায় নিয়ে যায়!

(তবে পাথরে ঘষা খাওয়া থেকে সাবধান!)

বিকেলে, সূর্য যখন নিভু নিভু, সোনালি আলোর প্রতিফলনে পাথরে ধাক্কা খাওয়া প্রবহমান পানিকে মনে হয় গলিত সোনা, মনে হয় গলিত সোনা যেন চাড়পাশে ছিটকে পড়ছে! চলে যান না একদিন এর সৌন্দর্য পান করতে।

কীভাবে যাবেনঃ

সিলেট নগরীর আম্বরখানা থেকে সিএনজি করে ডাইরেক্ট দয়ার বাজার। রিজার্ভ গেলে ১২০০ আর সিংগেল গেলে সিটপ্রতি ২২০ টাকা। যেতে এখন প্রায় দুই ঘণ্টার মতো লাগবে। পরে দয়ার বাজার থেকে চড়ার বাজার সিএনজি করে। রিজার্ভ নিলে ১২০-১৪০ টাকা লাগবে আর যেতে প্রায় ঘণ্টা খানেক লাগবে। সেখান থেকে লোকাল গাইড অথবা কারো কাছে জিজ্ঞেস করলেই দেখিয়ে দিবে উৎমাছড়ার রাস্তা। ৫ মিনিটের মতো লাগবে হেঁটে যেতে। সন্ধ্যা হওয়ার আগে আগে চলে আসা বেটার কারণ পাশেই বর্ডার। পরিশেষে সবাই সাবধান থাকবেন। একা একা যাওয়া উচিত না। ৪-৫ জনের একটা গ্রুপ হলে ভালো।

  •  উৎমাছড়ায় জলকেলি
  •  Bangladesh
  •  উৎমাছড়া, ভোলাগঞ্জ, সিলেট
  •  Car (Hire)
  •  No accommodation
  •  Normal local restaurant food

0 comments

Leave a comment

Login To Comment