Image

সিলেট ভ্রমন ব্লগ

ভ্রমন কথাটি শুনলেই মনের মধ্যে একটি উত্তেজনা বিরাজ করে। নতুন নতুন দৃশ্য,পরিবেশ,খাওয়া-দাওয়া,এডভেন্সার সবগুলা মিলিয়ে যেন এক রোমাঞ্চকর গল্প। যাকে বইয়ের পাতায় আবদ্ধ করলে ও মনের পাতায় আবদ্ধ করা সম্ভব নয়। তেমনি এক ভ্রমন কাহিনী বইয়ের পাতায় আবদ্ধ করার চেষ্টা করছি মাত্র। কোন রকম ভুল দোষ থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো। সময়টা ছিল শীতের,এমনি এক সময়ে কলেজ ক্যান্টিন এ ৫ বন্ধুর আড্ডায় কথা উঠেছিল ভ্রমন নামক রোমাঞ্চকর বস্তুটির। ভ্রমন পিয়াসু আমরা ৫বন্ধু ছোট-খাটো বন্ধ হলেই বেরিয়ে পরতাম রোমাঞ্চের সন্ধানে। ভ্রমন কাছে হোক বা দূরে মনের আনন্দ সবার আগে প্রাধান্য পায়। আমরা সবাই কয়েকটি জায়গা তুলে ধরলাম, এবার পালা সিদ্ধান্তের। হুম সিদ্ধান্ত নেওয়াটা আসলেই অনেক কষ্টের। উদাহরনস্বরূপ, আমার সামনে ভালো ৩টি খাবার দেওয়া হল, কিন্তু আমার যে কোন ১টা বেচে নিতে হবে, অন্য ২টির আশা ত্যাগ করতে হবে। এই রকম অবস্থায় পরে আমরা সিদ্ধান্তে পৌঁছায়। নির্ধারন হলো সিলেট যাওয়া নিয়ে। সিলেট নিয়ে আমাদের কৌতূহল ও কম ছিল না। সাত রঙের চা, চা-বাগান, জাফলং, রাতারগুল জলাবন এগুলা তখন ছিল লোকমুখে শুনা স্বপ্নের দৃশ্য। সে স্বপ্নকে সত্য করতে আমাদের সিলেট নির্বাচন। সবকিছু ঠিক করে বেরিয়ে পড়লাম ৫বন্ধু। উদ্দেশ্য ছিল রাতে গাড়িতে যাওয়ার এবং সকাল সকাল সিলেট পদার্পণ। যে ভাবা সে কাজ, ৫বন্ধু টিকেটে কাউন্টারে গিয়ে টিকেট কাটলাম এবং গাড়ি ছাড়ার অপেক্ষায় সময় গুনতে লাগলাম। সবার মনের মধ্যে যেন এক অন্য রকম আনন্দ। অবশেষে গাড়ি ছাড়লো। রাত আস্থে আস্থে বাড়তে লাগলো, ঘুমিয়ে পরলাম,এবং অপেক্ষায় ছিলাম পরবর্তী সূর্যোদয়ের। অবশেষে আমরা গন্তব্যে পৌঁছলাম। ৩দিনের যাত্রা পথের ১ম দিন শুরু হলো।বাস থেকে নেমে আমরা একটু চা খেলাম রিফ্রেশমেন্ট এর জন্য। গুগল ম্যাপ সার্চ করে আমাদের গন্তব্য ঠিক করে নিলাম, ১ম গন্তব্য চা-বাগান ঘুরতে যাওযার। স্থানীয় লোকদের সাহায্য নিয়ে আমরা রহনা দিলাম মালনীছড়া চা-বাগান এর দিকে। চা-বাগানের দৃশ্যটি ছিল অপরূপ সুন্দর। সৃষ্টিকর্তা যেন নরম হাতের ছৌঁয়ায় সময় নিয়ে তৈরী করেছেন এটি ,যেন শিল্পির রঙ তুলির আঁচড়ে ফুঁটে উটা দৃশ্য। চা-বাগান ঘুরতে ঘুরতে দুপুর হয়ে গেল। দুপুরের খাবার শেষ করে পরবর্তী গন্তব্য হযরত শাহজালাল রা মাজারের পথে রহনা দিলাম। মাজারে প্রবেশ করলাম নিয়ম মেনে প্রার্থনা শেষ করে বেরিয়ে পুরো মাজার চত্ত্বর ঘুরলাম। এদিকে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতে শুরু করলো। আমরা থাকার জায়গা খুঁজে নিলাম এবং ১ম দিনের যাত্রার ইতি টানলাম। পরবর্তী দিনের গন্তব্য শুরুর আগে আমরা সাত রঙের চা পরখ করলাম। অবশেষে আশ্চয্যের সাতটা রঙের চা নিজের চোখে দেখলাম। পরের গন্তব্য রাতারগুল জলাবন। গন্তব্যে পৌঁছে একটি নৌকা নিলাম এবং জলাবনে ঘুরতে লাগলাম।এই এডভেন্সার টা ছিল পুরাই অন্যরকম। এই জায়গার দৃশ্যটি ছিল অপরূপ, যা বলে বুঝানো সম্ভব না। পরের যাত্রা বিছানাকান্দি, প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের সৃষ্টি যেন এটি,পাহাড়ি ঝর্নার জলে অনেক মজা করলাম। আবার প্রকৃতির নিয়মে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা পাখিদের মতো আমাদের ও নিড়ে ফিরার পালা। স্থানীয় এক লোকের সহায়তায় থাকার জায়গা ঠিক করে তার পরামর্শে ১টা ব্রীজ ঘুরতে গেলাম। ব্রীজটির নাম ক্বীন ব্রীজ। ক্বীন ব্রীজের নিচে বহমান সুরমা নদী রাতের অন্ধকারে তার মায়াবী রূপ ধারন করে, যা না দেখলে বুঝাই যায় না। তারপর ফিরে আসলাম, এবাবে আমাদের দ্বিতীয় দিন সমাপ্ত হলো। পরদিন সকাল, রাতেই ঠিক করা হলো গন্তব্য, ১ম প্রহরে জাফলং এর দিকে যাত্রা শুরু করলাম ,বিছানাকান্দি আর জাফলং এর মধ্যে অনেকটা মিল থাকলে ও দুটিই ভিন্ন ভিন্ন আনন্দ দেয়।এরপর স্থানীয় লোকদের সহায়তায় আমরা ৩টি সুন্দর জায়গা ঘুরলাম তার মধ্যে মনীপুরী রাজবাড়ি ও আলি আমজাদের গড়ি দৃশ্যটা অন্যতম ছিল। এইসব জায়গা ঘুরতে ঘুরতে দুপুর পেরিয়ে বিকেল। আমাদের ৩দিনের যাত্রা প্রায় শেষ। এবার গন্তব্য নিজের বাড়ির উদ্দ্যেশ্যে। কাউন্টারে গেলাম ঠিকেট কাটলাম, কিন্তু গাড়ি ছাড়তে আরো ৪ঘন্টা সময়। এই সময়টা কি করবো, ৫বন্ধু মিলে বেরিয়ে সিলেটের আরো কিছু জায়গা ঘুরলাম। অবশেষে বিদায়ের কাঙ্কিত সময় উপস্থিত হলো। মনের মধ্যে একরাশ আনন্দ নিয়ে গাড়িতে বসলাম। গাড়ি চলতে শুরু করলো। আস্থে আস্থে সিলেটকে পিছনে ফেলে আমরা আবার ব্যস্ততার ভিড়ে ফিরে এলাম। ভালো এবং খারাপ অনেক রকম অভিঙ্গতার মধ্যে ভ্রমনটি শেষ হলো। জানিনা মনের আবেগটা কতটুকু প্রকাশ করতে পারলাম। ধন্যবাদ “রুচি” কে এত সুন্দর একটি পোগ্রাম আয়োজনের জন্য। নিলয়। যোগাযোগ:- 01864474301

  •  সিলেট ভ্রমন
  •  Bangladesh
  •  সিলেট
  •  Sylet tour
     Sylet tour
  •  Bus
  •  2000
  •  500

0 comments

Leave a comment

Login To Comment